শূণ্য নিয়ে যত কথা

 প্রিয় শিক্ষার্থীরা আজ আমরা জানবো রহস্যঘেরা শূণ্যর কথা । শূন্য কি? জানবো শূন্যের ইতিহাস, কে শূন্য সংখ্যাটি আবিষ্কার করেন? শুন্য কি একটি জোড় সংখ্যা? আরো জানবো শূন্য কি একটি স্বাভাবিক সংখ্যা? এটি কি একটি পূর্ন…

Advertisement

 প্রিয় শিক্ষার্থীরা আজ আমরা জানবো রহস্যঘেরা শূণ্যর কথা । শূন্য কি? জানবো শূন্যের ইতিহাস, কে শূন্য সংখ্যাটি আবিষ্কার করেন? শুন্য কি একটি জোড় সংখ্যা? আরো জানবো শূন্য কি একটি স্বাভাবিক সংখ্যা? এটি কি একটি পূর্ন সংখ্যা? এখানেই শেষ নয়। শূন্য নিয়ে আরো কিছু কথা থাকছে এই পোস্টে। তাহলে চলো শুরু করা যাক-

শূন্য নিয়ে যত কথা

শূণ্য নিয়ে যত কথা

শূন্য নিয়ে পিথাগোরাস

আমাদের সবার পরিচিত গ্রিক পন্ডিত পিথাগোরাসকে দিয়েই শুরু করা যাক। গ্রিক পন্ডিত পিথাগোরাস তো শূন্য এবং অমূলদ কথা শুনলেই কঠিন শাস্তি দিতেন তার গোপন সংঘের শিষ্যদের। তার মতে, শূন্য হলো শয়তানের দোসর আর অমূলদ সংখ্যা হলো বিশ্বপ্রকৃতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। কারণ গণিতবিদ পিথাগোরাস একজন সঙ্গীতজ্ঞও ছিলেন।

Advertisement

বলা চলে, গণিতই তাকে সঙ্গীতের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। পিথাগোরাসের শূন্যভীতি তো সভ্যতাক্রমিক কিন্তু অমূলদ সংখ্যার প্রতি বিতৃষ্ণার কারণ হলো তিনি খেয়াল করেছেন যে তারের বাদ্যযন্ত্রগুলোতে যখনই মূলদ সংখ্যার অনুপাতে টোকা দেওয়া হয় তখনই সুরেলা আওয়াজ বের হয়। কিন্তু যখনই তা অমূলদ হয়ে যায় তখনই সেখান থেকে বেসুরো আওয়াজ বের হতে থাকে। এ থেকে পিথাগোরাস একটি বড় সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন যে, বিশ্ব সংসারে সব কিছুতেই রয়েছে মূলদ সংখ্যারা, অমূলদ সংখ্যা মানেই বেসুর, বিশৃঙ্খলা। আর তাই স্রষ্টা অমূলদ সংখ্যা পছন্দ করেন না এটাই ছিল মহামতী পিথাগোরাসের বদ্ধমূল ধারণা।

পিথাগোরাস আয়ার (Iyer) নামক একটি বাদ্যযন্ত্রের ছবি আঁকছেন; Source: a fresco by Raphael Sanzio কিন্তু হিপসাস নামক এক হতভাগা শিষ্য সর্বপ্রথম অমূলদ সংখ্যার অস্তিত্ব টের পেয়েছিলেন (২ এর বর্গমূল যে একটি অমূলদ সংখ্যা তা হিপসাসই আবিষ্কার করেছিলেন) এবং তা প্রকাশ করার অপরাধে তাকে পানিতে ডুবে স্বেচ্ছা মৃত্যুদন্ড ভোগ করতে হয়েছিল (২)। কিন্তু সত্য একদিন বেরিয়ে আসবেই।

পিথাগোরাস নিজেই অমূলদ সংখ্যার খুব সুন্দর একটি অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিলেন। গোল্ডেন রেশিও বা সোনালী অনুপাত হলো সেই সৌন্দর্যময় সংখ্যা, প্রকৃতিতে যার হাজারো উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু তখনকার দিনে তিনি ছিলেন রীতিমতো দেবতুল্য। একবার যখন ঘোষণা দিয়েই ফেলেছেন যে, শূন্য এবং অমূলদ সংখ্যা ঈশ্বরের পরিপন্থী, সে কথা আবার কোন মুখে তিনি ফিরিয়ে নিবেন। তাই এদের অস্তিত্ব প্রমাণ পেয়েও খুব সযত্নে গোপন রেখেছিলেন পিথাগোরাস ও তার গুপ্ত সংঘের সদস্যরা অর্থাৎ তার অনুসারীরা। এই ছিল গ্রিক সভ্যতায় শূন্যের অবস্থান। এবার মনোযোগ দেওয়া যাক একটু পূর্বে।

Advertisement
ভারতে শূন্যের ইতিহাস

ভারতীয় উপমহাদেশে পশ্চিমের নিগৃহীত শূন্য ও অসীম বেশ যত্নে ও মায়ায় বড় হচ্ছিল তখন। কারণ ভারতীয়দের কাছে শূন্য মা ব্রহ্মার প্রতীক (৩)। শূন্য ও অসীম ব্রহ্মারই দুই রুপ। ৪৫৮ খ্রিস্টাব্দে হিন্দুধর্মের পবিত্র গ্রন্থ ঋগ্বেদে প্রথম শূন্যের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। সংস্কৃতে একে ‘শূনিয়া’ বা খালি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। তাছাড়া বৌদ্ধ ধর্মেও মনকে খালি করে অর্থাৎ জাগতিক সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে ধ্যানে মনোনিবেশ করার কথা পাওয়া যায়। ভারতের গোয়ালিয়রের এক মন্দিরের শিলালিপিতেও শূন্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

তাছাড়া খ্রিস্টীয় তিন থেকে চার শতকের মাঝে লেখা বাকশালি পান্ডুলিপিতেও শূন্যের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। বুঝতেই পারছেন এখানে শূন্যের কতটা কদর ছিল।  বাকশলি পান্ডুলিপিতে শূন্য; Source: ancientpages.com এদিকে খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে দিগ্বিজয়ী গ্রিক বীর আলেক্সান্ডার যখন ভারত আক্রমণ করলেন তখন তার সৈন্যসামন্তের মাধ্যমে ভারতীয়রা ব্যবিলনীয়দের গণনা শাস্ত্রের কথা জানতে পারে।

..........

ব্যবিলনীয়রা যে শূন্যকে সংখ্যা হিসেবে গ্রহণ না করলেও সংখ্যাব্যবস্থায় ‘স্থানরক্ষক’ হিসেবে গ্রহণ করেছে তা এদের কাছ থেকেই জানতে পারে। এবার ভারতীয়রা আর শূন্যকে নিগৃহীত হতে দিলেন না। শূন্যকে তারা তাদের ১০ ভিত্তিক সংখ্যা মালায় স্থান দিলেন। আনুমানিক ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রহ্মগুপ্ত নামক এক গণিতবিদ সর্বপ্রথম শূন্যকে সংখ্যা হিসেবে ব্যবহার করেন। তিনি শূন্য হিসেবে সংখ্যার নিচে ডট চিহ্ন ব্যবহার করতেন।

Advertisement

 গণিতবিদ ব্রহ্মগুপ্ত প্রথম শূন্যকে সংখ্যা হিসেবে ব্যবহার করেন; Source: currentriggers.com শূন্য দিয়ে যোগ-বিয়োগ-গুণও করেছিলেন তিনি। শূন্য দিয়ে কোনো সংখ্যাকে যোগ বিয়োগ করলে সেই সংখ্যাই পাওয়া যায়। শূন্য দিয়ে গুণ করলে শূন্যই পাওয়া যায় এটাও তিনি জানতেন। কিন্তু বিপত্তি বেঁধেছিল কোনো সংখ্যাকে শূন্য দিয়ে ভাগ করার ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে তিনি ভুল একটি করেন তা হলো শূন্য দিয়ে কোনো কিছুকে ভাগ করলে (৪/০) শূন্যই পাওয়া যায়।

১২শ শতাব্দীতে আরেক ভারতীয় গণিতবিদ দ্বিতীয় ভাস্কর প্রমাণ করেন যে, শূন্য দিয়ে ভাগ করলে ফলাফল শূন্য হয় না, হয় অসীম। অনেকে মনে করেন, ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম শূন্যকে সংখ্যার মর্যাদা দেন সেকালের সেরা জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদ আর্যভট্ট। আর্যভট্ট মাত্র ২৩ বছর বয়সে তার সেরা গ্রন্থ ‘আর্যভটিয়া’ রচনা করেন। বইটির অধিকাংশ লেখাই ছিল গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে। চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণের সঠিক কারণ, পৃথিবী যে তার অক্ষের উপর দিনে একবার ভ্রমণ করে তা আমরা আর্যভটিয়া থেকেই জানতে পারি।

শুধু তা-ই নয়, তিনি ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল, পিরামিডের আয়তনও বের করেছিলেন এবং প্রকাশ করেছিলেন এই গ্রন্থে (৩)। কিন্তু এর সবই ছিল বর্ণনামূলক, কোনো গাণিতিক ভাষা তিনি ব্যবহার করেননি। হয়তো তিনি শূন্যকে নিজের অজান্তেই ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু কখনও গাণিতিক ভাষা কিংবা সংখ্যা হিসেবে নয়। তাই আর্যভট্টকে প্রথম শূন্যকে সংখ্যা হিসেবে ব্যবহারকারী বলা যায় না। প্রকৃতপক্ষে শূন্য কেউ কখনো আবিষ্কার করেনি। এমন নয় যে, হঠাৎ কারো মাথায় শূন্য বলে কিছুর উদ্ভব হলো। বরং ধীরে ধীরে প্রস্ফুটিত হওয়া ফুলের মতোই এটি আমাদের সংখ্যামালায় স্থান করে নিয়েছে। 

ভারতে থেকে শূন্যের যাত্রা

ভারতীয় জ্যোতির্বিদ ও গণিতবিদ আর্যভট্ট; Source: livemint.com এভাবে ০ ভারতীয়দের ১০ ভিত্তিক সংখ্যামালায় স্থান পায়। ১, ২, ৩…, ৯, ০ যাকে আমরা আরবি নিউমেরাল বলে জানি। কিন্তু আধুনিক ইতিহাসবিদ্গণ একে ভারতীয়দের কৃতিত্ব বলেই মানেন। কারণ আরবরা ভারতীদের কাছ থেকে শেখে, আর পশ্চিমারা আরবদের থেকে। ৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে শূন্য ভারত থেকে বাগদাদে এসে উপস্থিত হলো, আরবরাও তাকে সাদরে তাদের সংখ্যামালায় স্থান দিলো। পারস্য মুসলিম গণিতবিদ মুসা আল খোয়ারিজমি শূন্য বোঝাতে গোল বৃত্ত ব্যবহার করলেন, যাকে আজ আমরা শূন্য (০) বলে চিনি। তারপর এর নাম দিলেন ‘সিফর’।

 Source: hyd-masti.com লিওনার্দো ফিবোনাচি নামক এক ইতালীয় শিক্ষার্থী আফ্রিকায় যান উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য। এখন যেমন আমাদের দেশের কিংবা প্রাচ্যের শিক্ষার্থীরা পশ্চিমে যায় উচ্চশিক্ষা লাভ করতে, খ্রিস্টীয় দ্বাদশ এবং ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ঘটনা ছিল উল্টো। বরং পশ্চিমের মেধাবী শিক্ষার্থীরা আরব, মিশর, ইরাক, সিরিয়ায় যেত উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য। তরুণ ফিবোনাচি মুসলিম গণিতজ্ঞদের কাছ থেকে গণিত শিক্ষা লাভ করে দেশে ফিরে যান। কালক্রমে তিনি নিজেও একজন গণিতবিদ হয়ে উঠেন। তিনিই প্রথম আরবি গণিত এবং শূন্যকে ইউরোপীয়দের সামনে তুলে ধরেন। এভাবে ভারতের ‘শূনিয়া’ আরবের ‘সিফর’ হয়ে ধীরে ধীরে পশ্চিমে ‘জিরো’তে পরিণত হলো।

 

শূন্য কি?

সহজ ভাবে বলা যায় শূন্য হচ্ছে -১ এবং ১ এর মধ্যবর্তী একটি সংখ্যা । গনিতে শূন্য পরিমাপ করতে এর ব্যবহার হয়ে থাকে ! ধরুন, আপনার কাছে দুটো কলম আছে, আপনার কোন বন্ধুকে এই দুটো কলম দিয়ে দিলেন । এখন আপনার কাছে কতটি কলম বাকি রইল? এর উওর হবে শূন্য । এই শূন্য সংখ্যাটি ধনাত্মক সংখ্যাও না এবং ঋণাত্মক সংখ্যাও না । আর শূন্য অন্যান্য সংখ্যার একটি স্থানধারক ডিজিট হিসেবে ব্যবহৃত হয়(যেমন:২০,২০৪,২৮০) উদাহরণস্বরূপ: ২০৪ = ২ × ১০০+০×১০+৪×১ এটা স্পষ্ট যে শূন্য ধনাত্মক সংখ্যা এবং অঋনাত্মক সংখ্যা নয়।

 

কে শূন্য সংখ্যাটি আবিষ্কার করেন?

এর উওর এক কথায় দেয়া কারো পক্ষেই সম্ভব না। কেননা এরপিছনে রয়েছে অনেক ইতিহাস ।অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজকে শূন্য সংখ্যা হিসেবে প্রতিঠ্ঠিত হয়েছে। আধুনিক ০ প্রতীকটি ষষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতে আবিষ্কৃত হয়।পরে পারস্য এবং আরবদেশনিবাসীগণ এর ব্যবহার করা শুরু করেন । তারপরে ইউরোপেও এর ব্যবহার শুরু হয়। শূন্যের প্রতীক শূন্য সংখ্যাটি ০চিহ্ন দিয়ে denoted হয় । শূন্য সংখ্যাটির বৈশিষ্ট্য:- ধরুন x কোন বাস্তব সংখ্যা হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে। শূন্য সংযোজন x এর সাথে প্লাস শূন্য সংযোজন করলে তার যোগফল x x + 0 = x

 

উদাহরণস্বরূপ:5 + 0 = 5 শূন্য বিয়োগ x এর সাথে (মাইনাস )শূন্য বিয়োগ করলে তার বিয়োগফল হবে x x – 0 = x উদাহরণস্বরূপ:5 – 0 = 5 শূন্য দ্বারা গুণ x এর সাথে শূন্য গুন করলে তার গুনফল হবে 0 এক্স × 0 = 0 উদাহরণস্বরূপ:5 × ২ 0 = 0 শূন্য দ্বারা বিভক্ত সংখ্যা শূন্য দ্বারা কোন সংখ্যাকে বিভাজন করলে তা সংজ্ঞায়িত করা হয় না।

 

উদাহরণস্বরূপ:5 /0=অসংজ্ঞায়িত একটি সংখ্যা দ্বারা বিভক্ত শূন্য একটি সংখ্যা দ্বারা একটি শূন্য বিভাজন শূন্য হয়: 0 / x= 0 উদাহরণস্বরূপ:0 / 5 = 0 শূন্য ক্ষমতায়(power) সংখ্যা শূন্য দ্বারা উত্থাপিত একটি সংখ্যার শক্তি এক:x^0 = 1 উদাহরণস্বরূপ:5^0 = 1 শূন্য এর Logarithm শূন্য বেস বি logarithm অনির্ধারিত: logb (0)

 

অনির্ধারিত শূন্য কি জোড় বা বিজোড় সংখ্যা?

জোড় সংখ্যার সেট:{… , -4 -10, -8, -6,, -2, 0, 2, 4, 6, 8, 10, …} বিজোড় সংখ্যার সেট:{… , -9, -7, -5, -3, -1, 1, 3, 5, 7, 9, …} শূন্য জোড় সংখ্যার সদস্য:0 ∈ {2k, K ∈ ℤ} তাই শূন্য একটি জোড় সংখ্যা এবং বিজোড় সংখ্যা নয়!

0 (শুন্য) একটি জোড় সংখ্যা।
প্রমাণ :
◾জোড় সংখ্যার সংজ্ঞানুসারে আমরা জানি- প্রত্যেক জোড় সংখ্যাকে ২ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল একটি পূর্ণ সংখ্যা হবে। যেমন- ২,৬,১৬ কে ২ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল হবে যথাক্রমে ১,৩,৮, যারা সবই পূর্ণ সংখ্যা। আবার ৩, ৫, ৯ কে ২ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল হবে যথাক্রমে ১.৫, ২.৫, ৪.৫ যাদের কোনটিই পূর্ণ সংখ্যা নয়। কিন্তু ০ কে ২ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল ০ হবে,০ একটি পূর্ণ সংখ্যা। সুতরাং জোড় সংখ্যার সংজ্ঞানুসারে আমরা দেখছি ০ (শুন্য) জোড় সংখ্যা।

 

◾আবার জোড় ও বিজোর সংখ্যার যোগ-বিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা জানি-

১। জোড় + জোড় = জোড়

২। জোড় – জোড় = জোড়

৩। বিজোড় + বিজোড় = জোড়

৪। বিজোড় – বিজোড় = জোড়

৫। জোড় + বিজোড় = বিজোড়

৬। জোড় – বিজোড় = বিজোড়

 

এখন শুণ্যের ক্ষেত্রে –

১। ২ + ০ = ২

২। ২ – ২ = ০

৩। -৩ + ৩ = ০

৪। ৩ – ৩ = ০

৫। ০ + ৩ = ৩

৬। ০ – ৩ = -৩

 

উপরের কোন ক্ষেত্রেই ০ বিজোড় সংখ্যার কোন গুনাগুন দেখাচ্ছে না। কিন্তু জোড় সংখ্যা হিসেবে সকল শর্তই পালন করছে।

 

সুতরাং বলা যায়, ০ (শুন্য) কখনোই বিজোড় সংখ্যা নয়। ০ (শুন্য) একটি জোড় সংখ্যা

 

তাহলে শূন্য কি একটি স্বাভাবিক সংখ্যা?

স্বাভাবিক সংখ্যার জন্য দুটি সেট সংজ্ঞায়িত হয়। অঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট:ℕ 0 = {0,1,2,3,4,5,6,7,8, …} ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট:ℕ 1 = {1,2,3,4,5,6,7,8, …} শূন্য অঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট সদস্য:0 ∈ ℕ 0 শূন্য ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট সদস্য নয়:0 ∉ ℕ 1

 

তাহলে শূন্য কি একটি পূর্ন সংখ্যা?

পূর্ণসংখ্যার তিনটি সংজ্ঞা আছে:- পূর্ণসংখ্যা সংখ্যার সেট:ℤ = {0,1,2,3,4,5,6,7,8, …} অঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট:ℕ 0 = {0,1,2,3,4,5,6,7,8, …} ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট:ℕ 1 = {1,2,3,4,5,6,7,8, …} অতএব বলা যায় শূন্য হচ্ছে পূর্ণসংখ্যার সেট সদস্য এবং অঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট সদস্য: 0 ∈ ℤ 0 ∈ ℕ 0 শূন্য ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট সদস্য নয়:0 ∉ ℕ যেহেতু পূর্ণসংখ্যা সংখ্যার সেট:ℤ = {0,1,2,3,4,5,6,7,8, …} শূন্য পূর্ণসংখ্যা সংখ্যার সেট সদস্য:0 ∈ ℤ তাই শূন্য একটি পূর্ণসংখ্যা সংখ্যা।

 

শূন্য কি একটি মূলদ সংখ্যা ?

একটি মূলদ সংখ্যাকে দুটি পূর্ণসংখ্যা সংখ্যার ভাগফল হিসেবে প্রকাশ করা যেতে পারে । ℚ = {n/m; n,m∈ℤ} শূন্যকে দুটি পূর্ণসংখ্যা সংখ্যার একটি ভাগফল হিসেবেও লেখা যেতে পারে. উদাহরণস্বরূপ:0 = 0/3 তাই শূন্য একটি মূলদ সংখ্যা ।

 

শূন্য কি একটি ধনাত্মক সংখ্যা?

একটি ধনাত্মক সংখ্যার মান অবস্যই শূন্যের চেয়ে অনেক বেশী হয়। x> 0 উদাহরণস্বরূপ:5> 0 যেহেতু শূন্য শূন্যের চেয়ে বড় নয়, সেহেতু এটি একটি ধনাত্মক সংখ্যা হতে পারে না ।

 

তাহলে শূন্য কি একটি মৌলিক সংখ্যা ?

শূন্য মৌলিক সংখ্যা নয় । শূন্য একটি ধনাত্মক সংখ্যাও নয় এবং এর অসীম সংখ্যাক ভাজক আছে।

 

এই হলো শূন্য, রহস্যেঘেরা শূন্য ।

তোমাদের গণিত শেখা আর আনন্দের হোক । শুভ কামনা রইল সকল ক্ষুদে গণিতবিদরে জন্য ।

Advertisement

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *