কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় ও বিস্তারিত তথ্য ২০২৩
আপনি কি স্কলারশিপ নিয়ে কানাডায় পড়তে যেতে চান? জেনে নিন, কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় ও বিস্তারিত তথ্য।
আপনি কি উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য Scholarship নিয়ে কানাডায় যেতে চান? কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ায় উপায় সম্পর্কে সঠিক তথ্য আমাদের অনেকেরই অজানা।
একজন মেধাবী শিক্ষার্থী নূন্যতম CGPA নিয়ে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করে কম খরচে বা বিনা বেতনে কানাডায় পড়ালেখা করার সুবিধা পেতে পারে।
চলুন আজকের আলোচনায় জেনে নেয়া যাক কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ায় উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য।
কানাডা স্কলারশিপ
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা নিয়ে বিনা বেতনে বা কম খরচে কানাডায় পড়ালেখা করতে যায় যা Canada Scholarship হিসেবে আমরা জানি।
বর্তমানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের কানাডায় স্কলারশিপ নিয়ে পড়ালেখা করার জন্য বেশ কিছু বিশেষ সুবিধার স্কলারশিপ রয়েছে।
কানাডায় পড়ালেখা করার জন্য যেসকল সাধারণ স্কলারশিপ রয়েছে তার মধ্যে Canadian Commonwealth scholarship Programme, Vanier Canada Graduate Scholarship, কানাডা সরকার প্রদত্ত বৃত্তি, Mitacs Globalink Research Internship ইত্যাদি অন্যতম।
একজন মেধাবী বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এখন নির্দিষ্ট সিজিপিএ অর্জন করে খুব সহজেই এই ধরনের স্কলারশিপ নিয়ে কানাডায় পড়ালেখা করতে পারবে।
তবে ২০২৩ সালে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর বা Doctoral Scholarship নিয়ে একজন শিক্ষার্থী কানাডা যেতে পারবে যা Natural Science and Engineering Research Council of Canada হতে ঘোষণা করা হয়েছে।
তার আপ-টু ডেট এবং সঠিক তথ্য জানার জন্য সরাসরি কানাডিয়ান স্কলারশিপ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
কানাডায় স্কলারশিপের জন্য কত সিজিপিএ প্রয়োজন
কানাডায় সকল ধরনের স্কলারশিপের জন্য সিজিপিএ একই না হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কলারশিপের জন্য নূন্যতম 3.0 থেকে 3.5 বা সিজিপিএ প্রয়োজন হয়।
স্কলারশিপের এই সিজিপিএ বিভিন্ন সময় বৃত্তি, প্রতিষ্ঠান এবং অধ্যায়নের কার্যক্রমের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধরনের যোগ্যতা, সিজিপিএ ও একাডেমিক দক্ষতার প্রয়োজন হয়ে থাকে। সাধারণত কানাডার স্কলারশিপ গুলো অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক এবং বেশিরভাগের একাডেমিক মান উচ্চ হয়ে থাকে।
তবে কানাডিয়ান স্কলারশিপ শুধুমাত্র CGPA এর উপর নির্ভর করে না। নূন্যতম সিজিপিএ থাকার পাশাপাশি অন্যন্য যোগ্যতার উপরও নির্ভর করে যেমন- পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বাড়তি জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা, নেতৃত্ব দেয়ার দক্ষতা, বিভিন্ন গবেষণার কাজ ইত্যাদি।
কানাডায় স্কলারশিপ নিয়ে পড়ালেখা করার জন্য নূন্যতম সিজিপিএ অর্জন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অবশ্যই কানাডিয়ান স্কলারশিপ দেয় এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়াও খুব জরুরি।
কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
একজন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর জন্য কানাডিয়ান স্কলারশিপ পাওয়ায় ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে যা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কানাডায় স্কলারশিপ নিয়ে পড়ালেখা করতে যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে এর বিস্তারিত সকল সঠিক তথ্য জেনে এরপর আবেদন করতে হবে।
কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ায় উপায় সম্পর্কে এখন আমরা ধাপে ধাপে বিস্তারিত জানব।
ধাপ ১: কানাডিয়ান স্কলারশিপ খুঁজে আবেদন করুন
কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আপনাকে বিভিন্ন Scholarship Program খুঁজে খুঁজে আবেদন করতে হবে। কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্কলারশিপের খুঁজতে হবে।
কানাডায় স্কলারশিপ খুঁজতে আপনি নিচের সোর্সগুলো ব্যবহার করতে পারেন:
- Scholarships Canada – এটি একটি ওয়েবসাইট যেখানে প্রায় ১০ হাজারের বেশি স্কলারশিপ তথ্য পাবেন।
- The Government of Canada – কানাডা সরকারও International Students দের জন্য স্কলারশিপ অফার করে।
- The Canadian Bureau for International Education– CBIE) আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন বৃত্তি বা Scholarship অফার প্রকাশ করে।
- The World Scholarship Forum ও একইভাবে কানাডা সহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রামের তালিকা শেয়ার করে।
ধাপ ২ – যোগ্যতা পূরণ করা
আপনি যেই স্কলারশিপটি নিতে আগ্রহী তার জন্য কি কি যোগ্যতা পূরণ করতে হবে তা আগে জেনে নিশ্চিত হতে হবে।
উক্ত স্কলারশিপের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভাষার দক্ষতা, বৃত্তি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান দ্বারা উল্লেখিত সকল ধরনের যোগ্যতা পূরণ করা এবং এর প্রমান দেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
যদি স্কলারশিপের জন্য প্রদত্ত যোগ্যতা আপনার না থাকে তবে তা অর্জন করার পরে তবেই আবেদন করতে পারবেন।
ধাপ ৩ – কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ
বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ নিয়ে কানাডায় যাওয়ার জন্য যেই কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলো স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে তাদের ওয়েবসাইট, পেইজ বা মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে স্কলারশিপ পাওয়ায় উপায় সম্পর্কে জেনে নেয়া যায়।
আপনার স্কলারশিপ পাওয়ায় জন্য তারা আপনাকে নির্দিষ্ট স্কলারশিপ, এর জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, আবেদন পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে পারবে।
ধাপ ৪ – সরকারি বেসরকারি বৃত্তি
বিভিন্ন কানাডিয়ান সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে যা আন্তর্জাতিক ভাবে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সুযোগ দিয়ে থাকে।
কানাডার সরকার বা বিভিন্ন সরকারি সংস্থা দ্বারা প্রদানকৃত বৃত্তি বা বেসরকারি সংস্থা দ্বারা প্রদত্ত বৃত্তির সম্পর্কে অনুসন্ধান করে আপনি আবেদন করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ভাবে লেখাপড়া করতে পারবেন।
ধাপ ৫ – স্কলারশিপের আবেদন করা
আপনার চাহিদা অনুযায়ী স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে এবং যোগ্যতার প্রমান দেয়ার পর এখন আপনাকে আবেদন করতে হবে।
আপনার স্কলারশিপের আবেদন বা অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি সঠিক ও নির্ভুল তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। এতে করে আপনার আবেদনটি শক্তিশালী হবে এবং তা অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের যেসব শিক্ষার্থী স্কলারশিপ নিয়ে কানাডা যেতে চায় তারা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহন করতে পারবে।
ধাপ ৬ – প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান
আপনার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অবশ্যই আপনার সকল ধরনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রদান করতে হবে।
শিক্ষার্থীর একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সুপারিশপত্র, একটি দরখাস্ত, জীবন বৃত্তান্ত বা সিভি এবং প্রতিষ্ঠান থেকে নির্দেশিত আরও বিভিন্ন ডকুমেন্টস প্রদান করতে হবে।
ধাপ ৭ – নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন
বিভিন্ন বৃত্তি অফিস, শিক্ষা উপদেষ্টা বা কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে যোগাযোগ করে স্কলারশিপ পাওয়ায় সকল নির্দেশিকা জেনে নিয়ে তা অনুসরণ করতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সাথে সাথে সকল ধরনের নির্দেশনা মেনে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে।
আপনার স্কলারশিপ অ্যাপ্লিকেশনের সকল আপডেট সম্পর্কে খোঁজ রাখতে হবে এবং বৃত্তি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ভালো যোগাযোগ রাখতে হবে। এতে করে আপনার Canada Scholarship পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা লাগে। তাছাড়া ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে ১০০০০ কানাডিয়ান ডলারের সমপরিমাণ প্রায় ৮ লক্ষ টাকা অর্থ ব্যাংকে জমার প্রমাণ দেখাতে হবে। Scholarship পেলে ও অন্যান্য কারণে এই খরচ কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।
ভিসা আবেদনের সময় Canadian Study Permit Fee বাবদ ১৫০ Canadian Dollar বা ৮৬১০ টাকা জমা দিতে হয়। ভিসা ফি ছাড়াও আবেদনকারীর Biometric Fee দিতে হবে যা ৮৫ কানাডিয়ান ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এছাড়াও মেডিকেল পরীক্ষা, ভাষার দক্ষতা, Study Permit, Fingerprint, ছবি ইত্যাদি বিভিন্ন খরচ বাবদ ১৪০০০ টাকা থেকে ১৭০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
FAQ’s
কানাডায় যাওয়ার ক্ষেত্রে IELTS এর স্কোর কমপক্ষে ৬.০০ হতে হবে। তবে আপনার পয়েন্ট এর বেশি হলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
পড়ালেখার উদ্দেশ্যে কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় আপনি সর্বোচ্চ ৪ বছরের মেয়াদ দিতে পারবেন।
স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার পর বায়োমেট্রিক করার প্রয়োজন হয়। এরপর ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে ভিসা পাওযা যায়।
স্টুডেন্ট ভিসায় স্কলারশিপ নিয়ে কানাডায় পড়ালেখা করার জন্য একজন শিক্ষার্থীর নূন্যতম সিজিপিএ ৩.০ থেকে ৪.০ এর মধ্যে হতে হবে।