ডিপ্লোমা ইন নার্সিং পড়ার যোগ্যতা কি ও কোথায় পড়বেন
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং পড়ার জন্য আপনাকে যোকোন বিভাগ থেকে SSC এবং HSC পরীক্ষায় মোট GPA 6 থাকতে হবে।
আপনি হয়তো ডিপ্লোমা ইন নার্সিং পড়তে আগ্রহী। ডিপ্লোমা ইন নার্সিং পড়ার যোগ্যতা কি এবং কোথায় ডিপ্লোমা নার্সিং পড়তে পারেন এসব বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই পোস্ট।
বাংলাদেশে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং করার জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে ন্যূনতম এইচএসসি পাস হলেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। চলুন জেনে নিই ডিপ্লোমা নার্সিং পড়ার যোগ্যতা ও কোথায় পড়বেন এ সম্পর্কে বিস্তারিত ও সঠিক কিছু তথ্য।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কি
সরকারিও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্সিং পড়ার জন্য তিনটি আলাদা আলাদা বিভাগ রয়েছে ।আপনার পছন্দ ও যোগ্যতা অনুযায়ী আপনি যে কোনোটিতে পড়তে পারেন।
- ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং (বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স) ,০৪ বছর মেয়াদি
- ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি (০৩ বছর মেয়াদি) এবং
- ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স ( ০৩ বছর মেয়াদি)
ডিপ্লোমা নার্সিং বলতে উপরে উল্লেখিত ৩ বছর মেয়াদী কোর্স গুলোকে বোঝানো হয়।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং পড়ার যোগ্যতা
৩ বছর মেয়াদি “ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি” অথবা “ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি” পড়ার জন্য আপনাকে যোকোন বিভাগ থেকে SSC এবং HSC উভয় পরীক্ষায় মোট GPA 6 থাকতে হবে। তবে আলাদাভাবে উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম GPA 2.50 থাকতে হবে।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং পড়ার অন্যান্য যোগ্যতা ও শর্ত:
- আপনাকে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে;
- আপনার বয়স ২২ বছরের বেশি হওয়া যাবেনা;
- ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে শুধু মহিলারা আবেদন করতে পারবেন;
- ডিপ্লোমা ইন নার্সিং এর জন্য আয়োজিত ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে।
আরও পড়তে পারেন:
ডিপ্লোমা নার্সিং ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন
এক ঘন্টার ১০০ নম্বরের MCQ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বিষয় | নম্বর |
---|---|
বাংলা | ২০ |
ইংরেজি | ২০ |
সাধারণ গণিত | ১০ |
সাধারণ বিজ্ঞান | ২৫ |
সাধারণ জ্ঞান | ২৫ |
এছাড়া এসএসসি পরীক্ষার জিপিএ থেকে ২৫ এবং ও এইচএসসি এর জিপিএ থেকে ২৫ করে, মোট ৫০ নম্বর নেওয়া হয়।
উদাহরণ: মনে করেন, আপনি SSC পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৫ পেয়েছেন। তাহলে আপনার নম্বর হচ্ছে ৪.৫ x ৫=২২.৫। অন্যদিকে HSC পরীক্ষায় আপনি জিপিএ ৫ পেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে আপনার নম্বর হচ্ছে ৫ x ৫=২৫।
এখন জিপিএ থেকে আপনার মোট নম্বর হলো (২২.৫ + ২৫)= ৪৭.৫। সর্বমোট (১০০ +৫০)= ১৫০ নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তির ফলাফল প্রস্তুত করা হয়।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোথায় পড়বেন
নিম্নোক্ত তিন ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি নার্সিং এ ডিপ্লোমা করতে পারেন। যেমন:
- সরকারি নার্সিং কলেজ;
- নার্সিং ইনস্টিটিউট;
- মিডওয়াইফারি ইনস্টিটিউট;
এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ধরন সরকারি, বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত হতে পারে।
সরকারি প্রতিষ্ঠান: নার্সিং শেখার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক ভালো মানের ।কেননা এখানে যেমন আপনি ভালোভাবে নার্সিং শিখতে পারবেন ঠিক তেমন পড়াশোনার খরচ লাগে না উপরন্তু বৃত্তি পাওয়া যায়।
৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি কোর্সের জন্য সারা দেশের ৪৯ টি সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে আসন সংখ্যা ২৮৮০ টি।এবং এই কোর্সর জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩১৪ টি যেখানে মোট আসন রয়েছে ১৫৭৬০ টি।
বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট: এগুলোকে প্রাইভেট নার্সিং ইনস্টিটিউট ও বলা হয়।সরকারি ইনস্টিটিউট গুলোতে চান্স না পেলে আপনি বেসরকারি গুলোে ভর্তি হতে পারেন ।কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার পড়ালেখার খরচ বেড়ে যাবে।তবে এক্ষেত্রে পড়াশোনার খরচ তেমন একটা বেশি না।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং এর বেতন কত
বাংলাদেশের একজন নার্স সরকারি চাকরিতে সাধারণত দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদা পেয়ে থাকে। তাদের মূল বেতন জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী দশম গ্রেড অর্থাৎ ১৬০০০ -৩৮,৬৪০ টাকা অনুযায়ী বেতন পেয়ে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল বিভিন্ন রকম বেতন দিয়ে থাকে । ভালো মানের হাসপাতাল গুলোতে ১৫০০০ থেকে ৩০০০০ টাকা বেতন দেয
নার্সেরা কোথায় কাজ পাবেন
একজন নার্সের কর্মক্ষেত্র হতে পারে:
- সরকারি ,বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
- আইনশৃঙ্খলা ও সামরিক বাহিনীর চিকিৎসা বিভাগে
- প্রাইভেট ক্লিনিকে
কাজের ক্ষেত্র ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী নার্সদের বিভিন্ন পদমর্যাদা থাকে যেমন-অ্যাসিস্ট্যান্ট নার্স, স্টাফ নার্স, ওটি সিস্টার বা নার্সিং সুপারভাইজার।
FAQs
নার্সিং একটি মহৎ পেশা।ডিপ্লোমা নার্সিং পড়ার মাধ্যমে এ পেশায় সহজে আসা যায়। যদি আপনি ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ে ভর্তি হওয়ার চিন্তাভাবনা করে থাকেন, আশা করি ব্লগটি আপনার উপকারে লেগেছে।
যদি উপকারী তথ্য মনে করেন, আপনার Social Media তে ব্লগটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইল।