সরকারি এবং যৌথ মূলধনী কোম্পানির অর্থায়নের ধারণা ও পার্থক্য
এই পোস্টে আলোচনা করব, সরকারি অর্থায়ন ও যৌথ মূলধনি কোম্পানির অর্থায়নের ধারণা ও পার্থক্য নিয়ে। সরকারি অর্থায়ন কাকে বলে, ব্যবসায় অর্থায়ন কাকে বলে, এ দুটির বিশেষ পার্থক্যগুলো আলোচনা করা হল। সরকারি অর্থায়ন কাকে বলে সরকারের…
এই পোস্টে আলোচনা করব, সরকারি অর্থায়ন ও যৌথ মূলধনি কোম্পানির অর্থায়নের ধারণা ও পার্থক্য নিয়ে। সরকারি অর্থায়ন কাকে বলে, ব্যবসায় অর্থায়ন কাকে বলে, এ দুটির বিশেষ পার্থক্যগুলো আলোচনা করা হল।
সরকারি অর্থায়ন কাকে বলে
সরকারের কোন কোন খাতে কী পরিমাণে ব্যয় করা হবে, মোট ব্যয় কত হবে তা নির্ণয় করে উক্ত ব্যয়ের টাকা কোন কোন উৎস হতে সংগ্রহ করা হবে নির্ধারণ করাকে সরকারি অর্থায়ন বলে।
সরকারি অর্থায়নে প্রতি আর্থিক বছরের শেষে, পরবর্তী আর্থিক বছরের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় হিসাব করে বাজেট প্রস্তুত করা হয়। বাজেটে কোন কোন উৎস হতে অর্থ সংগ্রহ করা হবে এবং কোন কোন খাতে কি পরিমাণ ব্যয় করা হবে তা নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে আগে ব্যয় নিরুপন করে পরে সে অনুযায়ী বিভিন্ন উৎস হতে তহবিল সংগ্রহ করা হয়।
যেমন, ধরা যাক ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য, সরকার মোট ব্যয় নির্ধারণ করল, ৫,৬৮,০০০ কোটি টাকা, এ ব্যয় নির্বাহের জন্য আয়কর, সারচার্জ, মূল্য সংযোজন কর, আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক, সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড, ট্রেজারি বিল ও ঋণ থেকে অর্থ সংস্থান করতে হবে।
যৌথ মূলধনী কোম্পানির অর্থায়ন কাকে বলে
অপরদিকে, যৌথ মূলধনী কোম্পানীর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আলাদা। এক্ষেত্রে মালিক বা শেয়ার মালিক ব্যবসা পরিচালনায় সরাসরি জড়িত থাকে না। তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার পর, কোম্পানি তার অনুমোদিত মূলধনকে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করে শেয়ার হিসেবে জনসাধারনের নিকট বিক্রয় করে অর্থ সংস্থান করে।
যেমন: ১০ কোটি টাকার মূলধন ১০ টাকার ১ কোটি শেয়ারে বিভক্ত করে সাধারণ জনগণের কাছে বিক্রয় করা হয়।
প্রতিটি শেয়ারের মূল্য মাত্র ১০ টাকা হওয়ার কারণে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও কোম্পানির শেয়ার কেনার মাধ্যমে উক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারে। শেয়ারহোল্ডারগণই কোম্পানির প্রকৃত মালিক এবং সাধারণত কোম্পানি থেকে লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন।
পেয়ে থাকেন। শেয়ারহোল্ডাররা তাদের ক্রয়কৃত শেয়ার বাজার যেমন: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ ইত্যাদি বাজারে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে।
শেয়ার ছাড়া বন্ড ও ডিবেঞ্চার বিক্রয় করেও যৌথ মূলধনি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সাধারণ জনগণের নিকট থেকে তহবিল সংগ্রহ করতে পারে।
সরকারি এবং যৌথ মূলধনী কোম্পানীর অর্থায়নের পার্থক্য
সরকারি অর্থায়ন | কোম্পানীর অর্থায়ন |
---|---|
দেশের উন্নয়ন অবকাঠামো নির্মাণ, জনগনের কল্যাণ বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারী অর্থসংস্থানের উদ্দেশ্য | কোম্পানীর মূনাফা অর্জন ও প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনই অর্থায়নের উদ্দেশ্য |
আয়কর, ভ্যাট, শুল্ক, আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণ সরকারি অর্থসংস্থানের মূল উৎস | কোম্পানী অর্থসংস্থানের উৎস হচ্ছে, শেয়ার, ডিবেঞ্চার ও ঋণপত্র বিক্রয়, ব্যাংক ঋণ ইত্যাদি |
অর্থের যোগান বৃদ্ধি বা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার মুদ্রার প্রচলন বা ইস্যু করতে পারে | অর্থসংস্থানের জন্য কোম্পানী মুদ্রার প্রচলন বা ইস্যু করতে পারেনা |
কোম্পানীর অর্থায়নে কিছু কিছু ব্যাপারে গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও সুযোগ রয়েছে | কিন্তু সরকারি অর্থায়নে জনগণের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা রয়েছে। তাই গোপনীয়তার কোন সুযোগ নেই। |
লেসনটি আপনার উপকারে আসলে এবং নিয়মিত এমন বিষয়ভিত্তিক লেসন, ফ্রি কোর্স ও টিপস পেতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন- www.facebook.com/bdclassofficial
আরো পড়তে পারেন-
- কোম্পানীর অর্থায়নের কার্যাবলি
- যৌথ মূলধনি কোম্পানির অর্থায়নের নীতিসমূহ
- যৌথ মূলধনী কোম্পানীর অর্থায়নের লক্ষ্যসমূহ অর্জনের উপায়